ফেসবুকে পোস্ট করার মত কিছু কথা
আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে ফেসবুকে যেসকল আর্টিকেল পোস্ট করলে হতে পারে মহাবিপদ তা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেরই তেমন একটা ধারণা নাও থাকতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই অতি উৎসাহী যে কোন সময় সামাজিক যোগাযোগ সাইট অমান্য করে আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকেন যার কারণে এই প্রকৃতির বিষয়ে গুরুত্ব না দেয়ার কারণে ভবিষ্যতে ঝামেলা পুহাতে হয়। তাই, ফেসবুক ব্যবহারে এইরূপ ঝামেলা এড়ানোর জন্য বিশেষকরে ফেসবুক প্রেমীদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি গুরুত্ববহন করে। প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করার মত কিছু কথা আপনাদের মাধ্যমে শেয়ার করার চেষ্টা করবো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মার্ক জাকারবার্গ এর মেটা মালিকানাধীন জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক প্রতিষ্ঠান এখন আমাদের জীবনের এক আবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তিগত কাজে, ব্যবসায়িক লেনদেনে এমনকি জনগুরুত্বপূর্ণ কাজে, অনলাইন পাবলিসিটির লক্ষ্যে আমরা হরহামেশাই সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। তবে, অনেকসময় দেখা যায়, এইসকল অনলাইন ভিত্তিক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা যায়। কেউবা আবার অতি উৎসাহী হয়ে ফেসবুকে কোন প্রকার পোস্ট বা মন্তব্যের কারণে অনেকসময় দেখা যায় আইনি ঝামেলার ঝুঁকি থাকে।
আরও পড়ুনঃ প্লে সামথিং বাটন ইউটিউব এর নতুন চমক
#ছেলেদের ফেসবুক স্ট্যাটাস
ফেসবুক একটি উম্মুক্ত সামাজিক যোগাযোগ সাইড। এখানে লিঙ্গ ভেদে ছেলেদের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা অত্যাবশ্যকীয়। বন্ধু ছেলে অথবা মেয়ে যেকেউ এই বিষয়ে কিছুটা শালীনতা বজায় রাখাটা একান্ত জরুরী। ছেলেদের অনেকসময় মেয়ে প্রফাইল দেখলে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানে উৎসাহিত হতে দেখা যায়। এটি ফেসবুক নিয়মের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। অনেকসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানি ও জেল জুলুমের শিকার হতে হয়। তাই, ছেলে ইউজারদের এই বিষয়গুলি মেনে চলার তাগিদ দিতে হবে।
#ফেসবুক পোস্ট ক্যাপশন
ফেসবুকে পোস্ট করার ক্ষেত্রে ক্যাপশন কে না চান। আপনার ফেসবুকের পোস্ট কে জনপ্রিয় করতে বাংলা ইউনিক বেস্ট ক্যাপশন বা বাংলা স্টাইলিশ ক্যাপশন পোস্ট করতে চাচ্ছেন ? যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমরা প্রত্যেকেই চাই সোশ্যাল মিডিয়াতে পাব্লিসিটি অর্জন করার পাশাপাশি ভক্তদের ভালোবাসা অর্জন করতে। পাশাপাশি জীবনের পথ চলার নানা বিষয় নিয়ে অনলাইনে শেয়ার করে থাকি। এইরূপ পোস্ট শেয়ার করার ক্ষেত্রে অনেক সময় নিজেদের লেখনী সাজিয়ে লেখা অনেকসময় হয়ে উঠে না। আবার আকর্ষণীয় ইমোজি দিয়ে সুন্দর স্ট্যাটাস তৈরি করতে আপনি ব্যর্থ হন। অতএব, ফেসবুকের পোস্ট করার ক্ষেত্রে ক্যাপশন একটি উত্তম পন্থা হতে পারে।
#ফেসবুকে কেমন প্রকৃতির পোস্ট আপলোড করলে হতে পারে বিপদে-
১. রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী পোস্ট
রাষ্ট্রের স্বার্থহানী হয় বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক আর্টিকেল পোস্ট ও মন্তব্য প্রদন করলে এটি এক কথায় রাষ্ট্রদ্রোহীর সামিল। এইরূপ পোস্ট ও উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে আপনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ইচ্ছা করলে যে কোন সময় আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এইরূপ আচরণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো, বহিঃ বিশ্বে দেশের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া এমনকি দেশের গোপনীয়তা বাহিরের বা বিদেশি শত্রু সাথে শেয়ার করা, দেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনী অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার। এই সকল কর্মকাণ্ডের সাথে যে কোন ব্যক্তি জড়িত হলে এটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
২. ধর্মীয় আবেগে আঘাত হানার কারণে
পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেই জাতি ও বর্ণ ভেদে মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করে থাকে। একজন মানুষের প্রথম আবেগ হচ্ছে তার ধর্ম। আমরা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে কিছু কিছু দুষ্ট মানুষকে দেখতে পাই জিনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়ে থাকে। এটি কখনই কাম্য নয়। যেকোন দেশের আইনে, ধর্ম বা ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি অবমাননাকর পোস্ট অত্যন্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে পরিগণিত। অতএব, আমাদের প্রত্যেকেরই অন্য ধর্মের মানুষদের ধর্মীয় আবেগ যাতে করে অক্ষুণ্ণ থাকে সেদিকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বদাই সচেষ্ট থাকতে হবে। সামাজিগ যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পোস্ট ও কমেন্টেও নানাপ্রকার কুটূক্তি ও অন্যের ধর্মের প্রতি বিদ্বেষমুলক আচরণ পরিহার করতে হবে। এটি বারংবার করা হলে রাষ্ট্র আপনার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তি আরোপ করতে পারে।
৩. ব্যক্তিগত আক্রমণ ও মানহানিকর আর্টিকেল
আপনি যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে যে কোনো ব্যক্তির অথবা সুনামধন্য কোন প্রতিষ্ঠানের মানহানী করার লক্ষ্যে প্রপাকান্ডা ছড়ান তাহলে এইরূপ কর্মকাণ্ড আইনের চোখে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয়। এমন কর্মকাণ্ডে যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন তবে সেসকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় যথোপযুক্ত শাস্থিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এই সকল কার্যকলাপের মধ্যে যেমন- কারো নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করা, কোন সুপারস্টারের বিরুদ্ধে অহেতুক গুজব ছড়ানো কিংবা প্রজাতন্ত্র বা রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার, বিনানুমতিতে ছবি শেয়ার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই, ফেসবুকে পোস্ট করার ক্ষেত্রে এই কর্মকাণ্ড থেকে আমাদেরকে সর্বদাই এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
৪. মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট খবর প্রচার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে এখন জানা-অজানা বিশ্বের নানাবিধ তথ্য-উপাত্ত হাতের নাগালে এসে পৌঁছেছে। কিছু অথেন্টিক খবরের সন্ধানে এখন অনেককেই বর্তমানে মেটা প্রযুক্তি ফেসবুক এর উপর নির্ভরশীলতা প্রতিনিয়তই চোখে পুড়ছে। মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট খবর প্রচারের মাধ্যমে একটি মহল সবসময় ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকতে প্রায়শই দেখা যায়। এইরূপ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট খবর প্রচার অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমাদের উচিত হবে এ জাতীয় আচরণ থেকে নিজেদেরকে সর্বদাই সরে আসতে হবে।
আরও পড়ুনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইনিং-এ বিষ্ময়কর ক্যানভা
৫. ফেসবুকে অশ্লীল ভিডিও ও আর্টিকেল শেয়ার
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা ফেসবুকে অশ্লীল ভিডিও ও আর্টিকেল শেয়ার করে নিজেদের পেজের ভিউ বাড়িয়ে পেজকে ভাইরাল করার ঘৃণিত কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে দেখা যায়। এটি একজন সচেতন ফেসবুক ব্যবহারকারীর নিকট থেকে কখনোই কাম্য নয়। ফেসবুকের নিয়ম নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অনেকেই এমন কর্মকান্ডের সাথে লিপ্ত হন যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
৬. ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতারণা
বর্তমানে ফেসবুকের মাধ্যমে সঠিক অথেনটিক বিজ্ঞাপন প্রচারের পাশাপাশি কিছু অস্বাদু ব্যক্তি আছেন যারা ফেসবুকে পেজ খুলে ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে সুকৌশলে অনেক অর্থ হাতিয়ে নেন। এটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য চরম আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু কিছু ফেসবুক ইউজার ভুয়া লটারির প্রলবন দিয়ে, চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রহাকদের সরলতার আস্রয় নিয়ে এমনটি করে থাকেন। এক্ষেত্রে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অবশ্যই যেকোন পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে বারংবার যাছাই-বাছাই করে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তবে, আপনার যাচাই-বাছাই এর সুবিধার্থে ফেসবুক আইডিটি বা পেজটি ভেরিফাইড কিনা অবশ্যই দেখে নিন। প্রয়োজনে উক্ত আইডির রেটিং বা স্টার দেখে আপনি লেনদেন করে দেখতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ অনলাইন মার্কেটে প্রতারণার প্রভাব
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করার মত কিছু কথা নিয়ে আলোকপাত করলাম যা আপনাদের ফেসবুক ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াবে। আজকের আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে এমনই প্রযুক্তি ভিত্তিক আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের সামনে আবারো হাজির হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আজকের মত বিদায় নিলাম।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url