OrdinaryITPostAd

গুগল সার্চে প্রাইস ফিল্টার ফিচার স্থাপন ও এআই প্রযুক্তির চমক

আমেরিকান প্রযুক্তি গুগল এলএলসি বা গুগল লিমিটেড লায়াবেলিটি বিশেষায়িত কোম্পানি যা ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা ও পণ্যের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বে সমাদ্রিত। ১৯৯৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বরে ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন গুগল নির্মান করে এক বিস্ময়কর আবিষ্কারের মাধ্যমেই গুগলের পথ চলা। প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে গুগল সার্চে প্রাইস ফিল্টার ফিচার স্থাপন ও এআই প্রযুক্তির চমক সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা প্রদান করার চেষ্টা করব।  
পোস্টসূচিপত্রঃ

উৎপত্তি

ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন গুগল নির্মান করে যে অভাবনীয় প্রযুক্তির সুচনা করেছে, তা এই গোটা বিশ্বকে অবাক করেছে। ১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ সালে ডোমেইন নাম গুগল নিবন্ধিত করা হয় এবং একপর্যায়ে ৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮ সালে গুগলকে প্রথম প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে গুগল তার সামগ্রিক কর্মকাণ্ড আলফাবেট ইনকর্পোরেটেড নামে সমন্বিত করার পরিকল্পনার বিষয়ে সকলকে অবহিত করে বলে জানা যায়। বিশেষ করে, গুগলের ১৪ শতাংশ শেয়ার তাদের নিজস্ব এবং বিশেষ সুপারভোটিং ক্ষমতা প্রয়োগ করে ৫৬ শতাংশই স্টকহোল্ডারকে নিয়ন্ত্রণ করে। 

গুগলের যুগান্তকারী অগ্রগতি

গুগল পুরো পৃথিবীতে বিভিন্ন ডেটা সেন্টারে প্রায় এক মিলিয়ন সার্ভার চালায়। ৫.৪ বিলিয়নের বা ৫০০ কোটির উপর অনুসন্ধানের অনুরোধসহ প্রায় ২৪ পেটাবাইট ব্যবহারকারী কর্তৃক তৈরী ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে গুগল প্রতিদিন। জানা যায়, ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে এলেক্সা আমেরিকার সবচাইতে বেশি ব্যবহারকারী ওয়েবসাইটের তালিকায় স্থান দেয় গুগলকে। গুগলের মুখ্য সেবা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গুগল সার্চ ব্যতীত আরও ব্যাপক সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হয় যেমন- নতুন নতুন পণ্য, বিজ্ঞাপন প্রচার, অধিগ্রহণ ও অংশীদারত্বের মাধ্যমে কোম্পানিটি দ্রুত প্রসারিত হয়। কাজ ও প্রোডাক্টিভিটি সেবা (গুগল ডক, শিট ও স্লাইড), ইমেইল (জি-মেইল), সময়সূচী ও তারিখ নির্ণয়ে (গুগল ক্যালেন্ডার), ক্লাউড ও স্টোরেজ (গুগল ড্রাইভ), সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (গুগল+), ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং ও ভিডিও চ্যাট (গুগল এলো/ডুও/হ্যাংআউট), অনুবাদক (গুগল ট্রান্সলেট), মানচিত্র (গুগল ম্যাপস/ওয়েজ/আর্থ/স্ট্রিট ভিউ), নোট সংগ্রহ (গুগল কিপ) এবং ইমেজ সংগ্রহ (গুগল ফটোজ) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আবার গুগলের নানাবিধ আন্তর্জাতিক সাইট যেমন- ইউটিউব, ব্লগার এবং অরকুট শীর্ষ  ১০০টি সাইটে স্থান লাভ করে আজ জনপ্রিয়তার শীর্ষে। অন্যদিকে ব্রান্ড্য তাদের ব্রান্ড ইকুইটি ডাটাবেজে গুগলকে ২য় স্থান মর্যাদায় সিক্ত করেছে। জানা যায়, ২০১১ সালের মে মাসে প্রথমবার গুগলে ইউনিক ভিজিটর এক মাসে এক বিলিয়ন পার হয় যা ২০১০ সালের মে মাসের চাইতে ৮.৪ ভাগ বেশি। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে, গুগল ঘোষণা করে এটি ৫০ বিলিয়ন বার্ষিক আয় করে ২০১২ সালে। যা গত বছরের চাইতে ১২ বিলিয়ন বেশি।
গুগল প্রতিনিয়তই সময়ের সাথে সাথে আকর্ষণী পণ্য ও সেবার মাধ্যমে নিজেদের আকৃতি ও উপযোগিতা অনেকাঙ্কশে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি নতুন নতুন কোম্পানি কিনে নিজেদের সাথে একীভূতকরণ, ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারত্ব ও বিজ্ঞাপন জগতে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে গুগলকে বহুমাত্রিকভাবে সমৃদ্ধ করেছে। তথ্য খোঁজার পাশাপাশি  ইমেইলিঙ্ক সুবিদা, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, ভিডিও শেয়ারিং, অফিস প্রোডাক্টিভিটি ইত্যাদির বিষয়ে গুগলের সেবা রয়েছে।

গুগল সার্চে প্রাইস ফিল্টার ফিচার

গুগল ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে অতি দ্রুতই সার্চ বারে প্রাইস ফিল্টার অপশনটি চালু করতে যাচ্ছে গুগল কর্তৃপক্ষ। দ্য টেক আউট লুক'র রিপোর্ট মোতাবেক, সার্চে প্রাইস ফিল্টার অপশন পরীক্ষা করে দেখছে গুগল। এই ফিচারটি যদি চালু হয়, তবে গুগল ব্যবহারকারীরা তাদের চাহিদা অনুপাতে যে কোন জিনিস খুঁজতে এবং দেখতে সক্ষম হবেন। নতুন এই প্রাইস ফিল্টারটি এযাবত পরীক্ষাধীন অবস্থায় থাকার কারণে সমস্ত ব্যবহারকারীর কাছে এটি পৌঁছাতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হয়। গুগল কর্তৃপক্ষ আরও জানায় যে, গুগল সার্চে শপিং সাইটের মতো দামের ফিল্টারের একটি স্লাইডারও দৃশ্যমান হবে। তবে, এই ফিচার নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রচার হলেও এখনও পর্যন্ত ফিচারটির আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্রে কোন তথ্য প্রকাশ করেনি গুগল।

জেনারেটিভ এআই খাতের দ্রুত উৎপত্তির বিষয়টি এ বছরের উন্নত দেশগুলোর নির্বাচনকে প্রভাবিত করার আশঙ্খা দেখা দিতে পারে। এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি কনটেন্টের কারণে নির্বাচন-সম্পর্কিত ভুল তথ্যের প্রচার এবং এক বছরে এসব কনটেন্ট তৈরির হার ৯০০ শতাংশ বেড়েছে। ভুল ও অসত্য তথ্য প্রচার রোধে চলতি বছরে একত্রে কাজ করার বিষয়ে চুক্তি করেছে বিশ্বের ২০টি শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি। মাইক্রোসফট, মেটা, গুগল থেকে শুরু করে অ্যামাজন, আইবিএম, অ্যাডোবি ও চিপ ডিজাইনার আর্ম এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কোম্পানি ওপেনএআই, অ্যানথ্রপিক, স্ট্যাবিলিটি এআই এবং স্ন্যাপ, টিকটক ও এক্সের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও কাজ করার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। এ চুক্তিতে এআইয়ের তৈরি বিভ্রান্তিকর ছবি, ভিডিও ও অডিও শনাক্ত করার, ভোটারদের প্রচারণামূলক কনটেন্ট সম্পর্কে জানানোর জন্য জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন তৈরি করার ও কোম্পানিগুলোর পরিষেবাতে এআই কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন টুল তৈরিতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এআইয়ের তৈরি কনটেন্ট শনাক্ত করতে বা এর উৎস চিহ্নিত করার প্রযুক্তিতে ওয়াটারমার্কিং বা মেটাডেটা এমবেডিং অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে কোম্পানিগুলো।
অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই এর ঘোষণা মতে, কোম্পানির ক্ষেত্রে নতুন এআই প্রিমিয়াম প্ল্যান ইউজারদের জেমিনি এআই এর অ্যাক্সেস প্রদান করা হবে। আবার শিগ্রই জিমেইল, ডকসের মধ্যে জেনারেটিভ এআই ফিচারগুলোর অফার দেয়া  হবে। তবে প্রতিশ্রুতি পূরণের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা বেঁধে না দিলেও কোম্পানিগুলো কেমন করে তা বাস্তবায়ন করবে তা চুক্তিতে নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছিল না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
জানা যায়, ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলাকালীন ভুল তথ্যের ব্যাপক প্রচার বড় আকার ধারণ করে। ঐসময় রুশ সাইবার অপরাধী চক্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণে মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সহজ টুল ও পথের সন্ধান পেয়েছিল। তাছাড়া, এআই এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের আইন প্রণেতারাও এআই ব্যবহারের বিষয়ে ইতোমধ্যে সতর্কতামুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন ।
মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের মান্যবর সভাপতি নিক ক্লেইগ জানান, আমি মনে করি যে এ চুক্তির ভালো দিকটি হলো এতে অনেক কোম্পানি স্বাক্ষর করেছে। যদি প্ল্যাটফর্মগুলো নিজেদের শনাক্তকরণ, উৎস, লেবেলিং, ওয়াটারমার্কিং ও আরও অনেক কিছুর নতুন নীতি তৈরি করে তাহলে এটি ভালো। তবে, এর জন্য সম্মিলিত উদ্যোগের বৃহত্তর প্রতিশ্রুতি না থাকলে আমরা আলাদা আলাদা প্রতিশ্রুতির জগাখিচুড়িতে আটকে থাকব।’

বিশ্লেষগদের ধারণা, ডিপফেক শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত শনাক্তকরণ ও ওয়াটারমার্কিং প্রযুক্তি এখনো সেভাবে বিকশিত হয়নি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ জাতীয় কোম্পানিগুলো শুধু প্রযুক্তিগত মান ও শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াগুলো নির্ধারণের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। স্টেট সিনেটর জশ বেকারের মতে, সমস্যাটি কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার কেত্রে কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই দীর্ঘতম পথ অতিক্রম করতে হতে পারে।
প্রযুক্তির দিক থেকে ওপেনএআই সম্প্রতি টেক্সট থেকে ভিডিও তৈরিতে নতুন টুল উন্মোচিত করেছে। সম্প্রতি সোরা নামের এআই সফটওয়্যারের বিষয়ে সকলকে অবহিত করেছে মাইক্রোসফট সমর্থিত কোম্পানিটি। মাইক্রোসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ জানান, এআই টুল যাতে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত না হয়, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।

প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে গুগল সার্চে প্রাইস ফিল্টার ফিচার স্থাপন ও এআই প্রযুক্তির চমক সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন কন্টেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আজকের মতো বিদায় নিলাম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪