ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন
যুগ যতই আধুনিক হচ্ছে, আমরা দিন দিন ব্যাটারিচালিত যানবাহনের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। যার জন্য যানবাহনে দ্রুততার সময়ে চার্জিং সুবিধা নিশ্চিতের জন্য চার্জিং স্টেশন এর প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চার্জিং স্টেশন বলতে সাধারণত যে জায়গা থেকে চার্জ প্রদান করা হয়, চার্জিং পয়েন্ট অথবা বৈদ্যুতিক যান, বৈদ্যুতিক সাপ্লাই ডিভাইস যা প্লাগ-ইন বৈদ্যুতিক যান সহ যানবাহনকে বৈদ্যুতিক রিচার্জ করার ক্ষেত্রে একটি ডায়নামা বা পাওয়ার কার যাতে বৈদ্যুতিক শক্তি সামর্থ বিদ্যমান থাকে। প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে সুখবর দিবো এই যে, সম্প্রতি ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন বাংলাদেশেও বিকাশ ঘটতে যাচ্ছে। চলুন জেনে নেই, ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন কি? কি তার পরিচয়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে দেশীয় বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং সুবিধা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে সামগ্রিকভাবে মহাসড়কে বিদ্যমান তেলবাহী ফিলিং স্টেশনের সাথে সাথে একটি করে ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ যুগান্তকারী বলে মনে করা হয়। বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি তেলের সংকট প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাওয়ায় ধারণা করা হয়, ২০৩০-৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তেলবাহী পরিবহন কমে আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। যার কারণে সরকার প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যার দরুন দেশীয় চার্জিং স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় "অডি বাংলাদেশের" কার্যালয় সন্নিকটে স্টেশনটি স্থাপন করা হয়। জানা যায়, ২০২৫ সাল নাগাদ ১১টি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে গ্রহণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুনঃ গাড়িতে চড়লে বমি হওয়ার কারণ ও সমাধান
আবার 'এখন চার্জ' নামক একটি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিক গাড়ির (ইভি) ব্যাটারি চার্জ করার জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন স্থাপন করেছে। সাথে সাথে ইভি চার্জিং এর জন্য 'এখন চার্জ' নামক অ্যাপ চালু করা হয়েছে যা ব্যবহারের মাধ্যমে চার্জের টাকা পরিশোধ করা সহজতর হবে। তথ্যমতে, সর্বশেষ ৩৪টি 'ইভি' গাড়ির রেজিস্ট্রেশন কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু, এর সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই। এই স্টেশনের মাধ্যমে ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে গাড়ির চার্জ ১০০ শতাংশ হবে বলে জানা যায়। মোটামুটি ১০০ শতাংশ চার্জ দ্বারা একটি ব্যাটারিচালিত ভারী যানবাহন চলবে প্রায় ৫০০ কিঃ মিঃ। বাংলাদেশে ৫০০ কিঃ মিঃ রাস্তা তেমন একটা না থাকায় এ ধরনের ব্যাটারিচালিত গাড়ি ব্যবহারে যেমন অনেকটাই সাশ্রয়ী হওয়া যাবে, পাশাপাশি আপনার টারিচালিত গাড়ি একবার চার্জ দিয়েই অনেকটা পথ অতিক্রান্ত করে আবার নিজ গন্তব্যে ।
আরও পড়ুনঃ গাড়ির নম্বর প্লেট সম্পর্কে জানুন
প্রযুক্তির দিক থেকে জাপানের ইওয়াটা শহরে ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন অর্থাৎ বৈদ্যুতিক চার্জিং স্টেশনে টেসলা রোডস্টার চার্জ গড়ে তোলা হয়। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকারের মান প্রতিষ্ঠিত করেছে দেশটি। যেমন-নামকরণ, শক্তি ও সংযোগের ক্ষেত্রে মান উপলব্ধি। বিশেষকরে টেসলা বিস্তৃত অঞ্চলে ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন মালিকানা প্রযুক্তি প্রসারিত করেছে এবং চার্জিং স্টেশন স্থাপনের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং চার্জিং প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর বিশেষত্ব হলো বৈদ্যুতিক চার্জিং পয়েন্টে যাওয়ার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ প্রদানের অপশনটি চালু হয়ে যায়। যেমন ডিসি চার্জিং স্টেশনগুলো সাধারণত প্রতিযোগী মান ব্যবহার করে বিভিন্ন যানবাহন চার্জ করার জন্য একাধিক সংযোগকারী চার্জিং সিস্টেমে আচ্ছাদিত থাকে। আবার পাবলিক চার্জিং স্টেশনগুলি নিকটবর্তী রাস্তার পাশে, শপিং সেন্টার ও সরকারী স্থাপনার এলাকায় পাওয়া যায়। আর ব্যক্তিগত চার্জিং স্টেশনগুলি পাওয়া যায় বসবাসের স্থান, কর্মক্ষেত্র এবং হোটেলগুলিতে।
ইতিহাস
ধারণা করা হয়, ১৮৯৬ সালের ব্যাটারি চার্জিং স্টেশনের ধারণাটি প্রথম প্রস্তাব আকারে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে আমেরিকার হার্টফোর্ড ইলেকট্রিক লাইট কোম্পানি ১৯৭০-১৯২৪ সাল নাগাদ জেনারেল ভেহিকল কোম্পানি (GeVeCo) ব্যাটারি পরিষেবার দ্বারা বৈদ্যুতিক ট্রাক পরিবেশন করেছিল। জেনারেল ভেহিকল কোম্পানি থেকে প্রাথমিকভাবে ব্যাটারি ছাড়াই ট্রাকটি ক্রয় করা হয়েছিল। জানা যায়, হার্টফোর্ড ইলেকট্রিক লাইট কোম্পানি থেকে পাওয়ারটি ইলেকট্রিক চার্জিং বিনিময়যোগ্য হিসেবে ক্রয় করা হয়।
১৯১৭ সালের শুরুর দিকে, মিলবার্ন ইলেকট্রিক গাড়ির মালিকদের জন্য জাপানের শিকাগোতে একই ধরনের পরিষেবা পরিচালিত হয়েছিল। ২০১২ সালে, টেসলা একটি মালিকানাধীন দ্রুত ব্যাটারি চার্জিং নেটওয়ার্ক তৈরি শুরু করে। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে টেসলা ঘোষণা করে যে, এটি ব্যাটারি অদলবদলের ক্ষেত্রেও সুযোগ সৃষ্টি করবে।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ব্যাটারি চালিত যানবাহনে চার্জিং সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন স্থাপন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url