ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাশি নিবারণের সহজ উপায়
আমরা প্রতিনিয়তই ঠান্ডাজনিত কাশির কারণে বিড়ম্বনার স্বীকার হই। কাশি থেকে নিস্তার পেতে আমরা সরাসরি ঔষধের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ি তা কিন্তু মোটেই উচিত নয়। আপনি চাইলে কাশির জন্য ঔষধ না খেয়ে ঘরোয়া উপায়েও এর সমস্যা সমাধান করতে পারেন। প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাশি নিবারণ করা যায় সে বিষয়ে কিছু টোটকা সহজ উপায় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।
পোস্টসুচিপত্রঃকৃত্রিমভাবে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে কাশির চিকিৎসা করার জন্য আমরা অনেকেই এর প্রতি ঝুকে পড়ি। কিন্তু প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কাশি নিবারণ করা যে স্বাস্থ্যের জন্য কত উপকারী তা আমাদের অনেকেরই অজানা। প্রাকৃতিক উপায়ে কাশি নিবারণ করলে প্রথমত আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। চট করে প্রচলিত ঔষধের প্রতি ঝুকে পড়বেন না। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে কাশি নিবারণের পদ্ধতি গুলো বেছে নিতে পারেন। নিম্নোক্তভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাশি নিবারণের জন্য আপনাদের উপকারে আসে এমন কিছু সহজ উপায় তুলে ধরা হলোঃ
লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা
প্রথমে একটু আদা কুচি নিন তারপর সেটিকে ভালোভাবে গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে নিন। তারপর আদা মিশ্রিত গরম পানিতে সামান্য পরিমাণে লবণ মিশিয়ে নিন। তারপর তা দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২ থেকে ৪বার গড়গড়া করুন দেখবেন আপনার কাশি নিবারণ অনেকটা সহজ হচ্ছে। মনে রাখবেন গড়গড়া করার অন্তত আধাঘণ্টা পরে খাবার খাবেন দেখবেন বেশ উপকার পাবেন।
এলাচ দিয়ে কাশি নিবারণ
আপনার কাশি নিবারণের জন্য তৎক্ষণাৎ বাজার থেকে ক্রয়কৃত ওষুধ সেবন না করে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিলে এ থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পাওয়া যায়। প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রকার গাছ-গাছালির নির্যাস কাশির নিরাময়ের পাশাপাশি শারীরিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত মসলা জাতীয় উপাদান এর মধ্যে এলাচ কাশি নিবারণের জন্য একটি কার্যকরী মাধ্যম হতে পারে। এলাচের মধ্যে অন্তর্নিহিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের জন্য জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। কাশি নিবারণের প্রক্রিয়াকরণ হিসেবে প্রথমে আপনি একটি পাত্রে পরিমাণমতো পানি নিন এবং খানিকটা মধুসহ এলাচ মিশিয়ে পানি জাল দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ভালোভাবে ফুটিয়ে এলাচ মিশ্রিত পানি ছেঁকে নিন ও ফুটানো পানিটুকু ঠান্ডা করে পান করুন। এভাবে কিছুদিন খাওয়ার পর দেখবেন আপনি শুকনো কাশি থেকে অনেকটা মুক্তি পেয়েছেন। প্রাকৃতিকভাবে আবহাওয়া পরিবর্তনের দরুন আমাদের ছোট বড় সকলেরই সর্দি, কাশি বা জ্বর লেগেই থাকে। এমন ভাইরাসজনিত রোগ বালাই থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিতে পারে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এলাচ।
আরও পড়ুনঃ নাভিতে তেল ব্যবহারের উপকারিতা
হলুদ দিয়ে কাশি নিবারণ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাশি নিবারণের জন্য উত্তম পন্থা হিসেবে কার্যকরী হলুদ দিয়ে কাশি নিবারণ। আমরা সাধারণত বাড়িতে রান্নাবান্নার ক্ষেত্রে তথা তরকারির গুণগতমান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে হলুদ এর ব্যবহার করে থাকি। এটি যেমন তরকারিকে জীবাণুমুক্ত করে পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি পদার্থ যা আমাদের মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। পাশাপাশি আপনি যদি নিয়মিত হলুদ পেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। প্রস্তুত প্রণালী হিসেবে এক চা চামচ হলুদের সাথে পরিমাণ মতো গোলমরিচের গুঁড়া নিয়ে সেটি চা কিংবা দুধ অথবা জুসের সাথে মিশিয়ে খান দেখবেন সর্দি-কাশির জন্য খুবই উপকারী।
তুলসী দিয়ে কাশি নিবারণ
গ্রাম অঞ্চলের ও শহরাঞ্চলে তুলসী পাতা ব্যাপকভাবে পরিচিত ও অনেক সহজলভ্য। এই তুলসী পাতা আমাদের শরীরের ঠান্ডাজনিত রোগের দাবাই হিসেবে কাজ করে থাকে। শীতকালে তুলসীপাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে বা চায়ের মধ্যে দিয়ে খেলে কাশি প্রতিরোধে বেশ উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া ফুটন্ত গরম পানিতে তুলসীপাতা বিজিয়ে দিয়ে মাথা টাওয়াল দিয়ে ঢেকে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে নাক দিয়ে পানির ভাপ নিলে দ্রুত কাশি সেরে যায়।
আরও পড়ুনঃ পুষ্টিগুণে কাঁঠাল ফল!!!
আদা দিয়ে কাশি নিবারণ
আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এই অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান আমাদের কাশি নিবারণের জন্য খুবই উপকারী। প্রস্তুত প্রণালী হিসেবে এক ইঞ্চি পরিমাণ আদা কুচি পানির সাথে ভালো করে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন এবং অন্ততঃ এক কাপ ঘন রস তৈরি করুন। এরপর তাতে পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে সেটা পান করে দেখুন আপনার গলার ভেতরের কফ পাতলা করে গলা পরিষ্কার করবে এবং কাশি নিমিষেই কমাবে। আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে থাকে তবে এর সাথে সামান্য পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেতে পারি দেখবেন উপকার পেতে পারেন।
মধু দিয়ে কাশি নিবারণ
মধু প্রাকৃতিক এমন একটি উপাদান যা পৃথিবী সৃষ্টির আদ্যপ্রান্ত থেকে মানব শরীরের অনেক ব্যাধির উপশম হিসেবে কাজ করে। আদা ও দারচিনি দিয়ে চা বানিয়ে তাতে খানিকটা লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে দেখবেন আপনার শুকনো কাশি দূর করার ক্ষেত্রে বেশ উপকার পাবেন। আপনার যদি পর্যাপ্ত পরিমানে চা খাওয়ার অভ্যাস না থাকে তাহলে কুসুম গরম পানিতে সামান্য পরিমাণে লেবুর রস ও দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে নিমিষেই কাশি থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাশি নিবারণের সহজ উপায় সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url