OrdinaryITPostAd

থ্যালাসেমিয়া রোগ কি - তা জানুন

চিকিৎসা বিজ্ঞানে থ্যালাসেমিয়া এক ধরনের মরণব্যাধি রোগ। এই রোগকে জটিল রোগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই রোগ থেকে প্রতিকার ও সচেতনতার জন্য প্রতি বছর ৮ই মে বিশ্বজুড়ে থ্যালাসেমিয়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই রোগটি বংশগতভাবে মানুষের শরীরে রক্তস্বল্পতার কারণ হিসেবে বিবেচিত। তাই, আজকের এই আর্টিকেলটি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের করনীয় সম্পর্কে ও কি কি কারণে থ্যালাসেমিয়া রোগ হতে পারে এবং থ্যালাসেমিয়ার বংশবৃদ্ধি প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করার জন্য একটি জনসচেতনতামূলক পোস্ট।
পোস্ট সূচিপত্রঃ থ্যালাসেমিয়া রোগটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশেও এর ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে বলে এমনটি ধারণা করা হয়। মানবদেহে থ্যালাসেমিয়া রোগটি এক প্রকার রক্তস্বল্পতার রোগ। বর্তমান বিশ্বে এই রোগটি বংশানুক্রমে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। তাই এক্ষনই সময় আমাদেরকে থ্যালাসেমিয়া রোগ থেকে প্রতিকার ও জনস্বার্থে এ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান আহরণ করা।

থ্যালাসেমিয়া রোগের সৃষ্টি

এই রোগের দরুণ আমাদের শরীরের রক্তের লোহিত কণিকা ভেঙে যায়। রক্তের লোহিত কণিকার মধ্যে থাকে হিমোগ্লোবিন আর এই হিমোগ্লোবিন আয়রন ও গ্লোবিন প্রোটিন দ্বারা গঠিত। প্রধান গ্লোবিন দুই জোড়া চেইন দ্বারা গঠিত একটি হলো আলফা আর অন্যটি বিটা।আর থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে দুই জোড়া গ্লোবিনের মধ্যে যেকোনো একজোড়া তৈরি কমে যায়। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের এমন প্রকৃতির কমে যাওয়া গ্লোবিনের নাম আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া বলা হয়ে থাকে। সাধারণত এই সকল রোগের উৎপত্তি বংশানুক্রমে হয়ে থাকে। এই আলফা ও বিটা থ্যালাসেমিয়া উভয়েরই কারণ বলা যায় জেনেটিক মিউটেশন। মিউটেশন উৎপত্তির কারণে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানে প্রোটিন তৈরি হয়। পৃথিবীর আদ্যপ্রান্ত থেকে ও প্রাণী জগতের সৃষ্টি শুরু থেকে এই মিউটেশন হয়ে আসছে। মিউটেশনের কারণে গ্লোবিন চেইন তৈরি অনেকাংশে কমে যায়। অন্যদিকে আরেক জোড়ার গ্লোবিন এর পরিমাণ বেড়ে যায়। অস্বাভাবিকভাবে গ্লোবিনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার দরুন লোহিত কণিকাটি ভেঙে যায় যার কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে থাকে এবং রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয়। তখনই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

থ্যালাসেমিয়া রোগের ধরন

আমাদের দেশে সাধারণত দুই ধরনের থ্যালাসেমিয়া রোগী দেখা যায়। এদের কারো কারো রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রয়োজন হয়, আবার কারো প্রয়োজন হয় না। যদি জেনেটিকভাবে সন্তানের বাবা-মা উভয়েই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন তবে কিছু সন্তান সুস্থ হতেও পারে, আবার কোন সন্তান রোগের বাহক হতে পারে। যদি বাবা-মা উভয়ই রোগী হন তাহলে সন্তান এই রোগে আক্রান্ত হওয়া তথা অসুস্থ বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। অনেক সময় দেখা যায়, বাবা-মা উভয়ের মধ্যে যদি একজন সুস্থ থাকে তাহলে অনেক ক্ষেত্রে সন্তান এই রোগের বাহক হলেও সন্তান সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, এই রোগটি বাবা-মার কাছ থেকে সন্তানের দেহে নিঃসৃত হয়।

প্রতিরোধের উপায়

সাধারণ ক্ষেত্রে এটি বংশানুক্রমে হয় বিধায় এটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কিছু জেনেটিক নিয়ম মেনে চলা আমাদের উচিত। প্রথমত, একজন পুরুষ ও নারীর বিবাহের পূর্বে একটি ছোট্ট টেস্ট থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করে নিজেরা কিছুটা হলেও সচেতন থাকা যেতে পারে। এক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ এই রোগটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। প্রতি বছর আমরা থ্যালাসেমিয়া দিবসে সকলকে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে টিনেজ থেকে প্রাপ্তবয়স্কদেরও থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয় টিপস প্রদান করা যেতে পারে, এতে করে থ্যালাসেমিয়া রোগীর পরিমাণ সঠিকভাবে শনাক্ত করতে সক্ষম হবো বলে আমরা আশা করি। সকল পর্যায়ে জটিল এই থ্যালাসেমিয়া রোগটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা সহজ হলে থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার থেকে আমরা সহজেই পরিত্রাণ পেতে পারি।

প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগ কি, রোগের সৃষ্টি, রোগের ধরন ও প্রতিরোধের সহজ উপায় সম্পর্কে বিশদ ধারণা পেলাম। এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪