''গাছ বাঁচান'' নিজে বাঁচুন!!!
অক্সিজেনের অপর নাম জীবন। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে বাঁচার জন্য দিয়েছেন অক্সিজেন। আর গাছের মধ্যে থেকেই সেই অক্সিজেন আমরা পেয়ে থাকি। প্রকৃতিতে যদি গাছের আধিক্য না থাকতো তাহলে কি হতো ভাবুন তো ? এমনটি চিন্তা করলে গা শিউরে ওঠে। তাই আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি জীবন বাঁচানোর প্রধান প্রয়োজন হিসেবে গাছ ব্যতীত কোন কিছুই চিন্তা করা যায় না। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে প্রকৃতির রাজা গাছ সম্পর্কে, আমাদের জীবন-জীবিকার সাথে গাছের যে আত্মিক সম্পর্ক, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে গাছের যে প্রয়োজনীয়তা সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করবো।
''গাছ বাঁচান'' নিজে বাঁচুন!!!
জীবন ও জীবিকার জন্য মূল্যবান এক প্রাণ স্পন্দের নাম গাছ। মানুষের যেমন প্রাণ রয়েছে, তেমনি গাছ, উদ্ভিদ, লতাপাতারও নিজস্ব প্রাণ রয়েছে। যার থেকে আমরা বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন উপাদান সংগ্রহ করে থাকে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে এবং গ্রীনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রকৃতিতে কাজ ব্যতীত যেমন চিন্তা করা যায় না তেমনি আমাদের বাঁচতে হলে গাছকে বাঁচানো একান্ত জরুরি। চলুন আমরা জেনে নেই কিভাবে এই মহামূল্যবান গাছকে পরিচর্যা করা সহ একে রক্ষা করার ক্ষেত্রে আমাদের কি কি করনীয়।
বর্তমানে গাছ লাগানোর প্রতিযোগিতা দিন দিন কমে গেলেও গাছ কাটার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তার চাইতে দ্বিগুণ হারে হারে এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কে না জানে গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। তবুও আমরা শখের বসে অপ্রয়োজনে গাছ কেটে থাকে। আমাদের জীবন রক্ষার্থে অক্সিজেন যেমন অত্যাবশ্যকীয়, তেমনি সেই অক্সিজেন যে গাছের মাধ্যমে আমরা পেয়ে থাকি তাকে রক্ষা করাও আমাদের প্রধান দায়িত্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষের দৈনিক ৫৫০ লিটার অক্সিজেন গ্রহণ প্রয়োজন। আমাদের বাঁচার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন পেতে হলে, তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে, মাটির ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছের বিকল্প নেই।
উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, একটি প্রাপ্তবয়স্ক কাজ ১৮ জন মানুষের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। যে এলাকায় গাছের আদিক্য কম থাকে সেসব এলাকায় মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্ট জনিত ও স্কিন রোগ ব্যাপকভাবে দেখা দেয়। আমরা হয়তো অনেকেই জানি, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে আমাদের স্কিন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই, পরিবেশবিদরা মনে করেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে গাছের ছায়া বেষ্টিত এলাকা সূর্যের এই বেগুনি রশ্মি থেকে আমাদের অনেকটা রক্ষা করে।
আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিষয়ক জার্নাল, এনভাইরনমেন্টাল ইন্টারন্যাশনালের এক গবেষণার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, বাড়ির আশপাশে এলাকা জুড়ে ৩০০ মিটার বা এক মাইলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ দূর পর্যন্ত সবুজ পরিবেশ থাকলে মানুষের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ১৬% কমে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষকদের ধারণা মতে, গাছের পর্যাপ্ত আচ্ছাদনের ফলে গাছ প্রকৃতিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে দশ ডিগ্রি তাপমাত্রায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। তাই এর জন্য দরকার প্রকৃতির মধ্যে ভরপুর ছায়া সম্বলিত গাছের আধিক্য। এক্ষেত্রে জনগণ অনুপাতে আমাদের তিনগুণ গাছ থাকা প্রয়োজন।
পরিশেষে, জীবন রক্ষার তাগিদে প্রকৃতির রাজা গাছ রক্ষার জন্য এখনই যুগান্তকারী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমাদেরকে ভবিষ্যতে ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। গাছ রক্ষায় এগিয়ে না এলে আমাদের জীবন রক্ষার ক্ষেত্রেও এক প্রকার হুমকির কারণ হতে পারে। তাই এর জন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি করা, প্রতিবছর আমাদের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ করা এবং গাছ কাটার ক্ষেত্রে সকলকে নিরুৎসাহী করা।আপনারা অনেকেই জানেন আজকের যে সাহারাভূমি তা একসময় সবুজ শ্যামলে গাছে পরিপূর্ণ ছিল। সেটি আজ মরুভূমিতে রূপান্তরের অন্যতম কারণ হলো অকারণে গাছ নিধন। তাই আমাদের এই সুন্দর প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বেশি করে বৃক্ষরোপণ করা একান্ত জরুরি।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জীবন বাঁচাতে, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে গাছ বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url