মশার আক্রমণ কৌশল সম্পর্কে জানুন
আমরা জানি মশা এক প্রকার মাছি জাতীয় কীট পতঙ্গ। মেরুদন্ড রয়েছে স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন-পাখি, সরীসৃপ প্রাণী, উভচর প্রাণী এমনকি কিছু মাছের শরীর থেকে রক্ত শোষণ করে নেয় এমনই হাজারো প্রজাতির মশা রয়েছে। স্ত্রী জাতীয় মশা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের রক্ত শোষণ করে থাকে। এদের মধ্যে কিছু মশা রয়েছে যারা রোগজীবাণু সংক্রমক। মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিইয়া, পিত জ্বর ও জিকা ভাইরাস ইত্যাদি রোগে সংক্রমিত করে থাকে। পুরুষ মশা কেবল একদিন বাঁচে। নারী মশা সাধারণত ৬-৮ সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকে। আর পুরুষ মশা একদিনের বেশি বাঁচলেও তাদের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়ে। এই পতঙ্গটি দীর্ঘ ২৫০০ বছর ধরে পৃথিবীর বুকে টিকে রয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে মশার আক্রমণ কৌশল ও গন্ধ চিনে মশা কিভাবে কামড়ায় তার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবো।
আমরা প্রতিনিয়ত দেখি মশা আমাদের সাধারণত সন্ধ্যাকালীন ও রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কামড়ায় বেশি স্বাভাবিক। আবার কিছু প্রজাতির মশার মধ্যে এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। মশা সম্পর্কে প্রচলিত এমন ধারণা পাল্টে দিলেন একদল গবেষণা বিজ্ঞানী। গবেষণাটি করেছেন জনস হপকিনস ব্লুম বার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলেথের সহকারী অধ্যাপক কোনর ম্যাকমেনিম্যন এবং দিয়েগা গিলারদো স্টেফানি রানকিন-টার্নার। তাঁরা বলছেন, মশা কাকে কামড়াবে তা নির্ভর করে মানুষের শরীরের গন্ধের উপর। মশার একটি বৈশিষ্ট্য হলো, সে ৬৬ ফুট দূর থেকেও মানুষের বন্ধ পায়। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের শরীরের গন্ধ ভিন্ন প্রকৃতির হয়। মানুষের শরীরের ঘামে থাকা নানান ধরনের রাসায়নিক উপাদানের কারণেও মশা আকৃষ্ট হয়। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের শরীরের ভিন্ন গন্ধে মশা কতটা আকৃষ্ট হয় তা তুলনা করে দেখা হয়। গবেষকরা দেখতে পান, কার্বক্সিলিক এসিডের প্রতি সবচাইতে বেশি আকৃষ্ট হয়। এই এসিডের মধ্যে রয়েছে বিউটিরিক, যা দুর্গন্ধযুক্ত পনিরে পাওয়া যায়। এই এসিড মানুষের শরীরে সৃষ্টির জন্য দায়ী এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। আবার দেখা যায় ইউক্যালিপটল নামের এক ধরনের রাসায়নিকের প্রতিও তাদের আকর্ষণ বেশি গাছগাছালিতে থাকে। মশা সাধারণত ফলমূল, লতাপাতা খায়। কিন্তু স্ত্রীর মশা ডিম ফুটানোর জন্য রক্ত গ্রহণের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। কারণ তাদের প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। যার দরুন তারা মানুষকে কামড়ায়। এই কামর মাঝেমধ্যে মানুষের জন্য প্রাণঘাতির কারণও হয়ে পড়ে।কারণ মশার কামড়ের কারণে বিভিন্ন প্রকার ভাইরাসজনিত রোগ সৃষ্টি হয়, যেগুলো মহামারী ও প্রাণঘাতী নামে পরিচিত। এই রোগ গুলোর মধ্যে ম্যালেরিয়া হলো সবচেয়ে বিপদজনক।
আরও পড়ুনঃ পানিবাহিত রোগ মনে রাখার উপায়
এক গবেষণায় দেখা যায়, বছরে ৬ লাখের বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর জন্য দায়ী। এসব গবেষণায় বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ পূর্বক মশার বিভিন্ন প্রজাতির গতিরোধ করা যেতে পারে। মশার এমন আক্রমণের কৌশল জানার ফলে মশাকে সহজে প্রলোভনে ফেলা বা বিমুখ করার নতুন ধারণা আমরা পেতে পারি। এর কারণে মানুষের প্রতি মশাকে আকৃষ্ট হওয়ার পথ বন্ধ করা সহজ হতে পারে। এতে করে মহামারি ম্যালেরিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটা সহজ যেতে পারে।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে মাছি প্রজাতির মশার কামড়ের কলাকৌশল, গতি-প্রকৃতি ও মশার ক্ষতিকারক রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url