বিপদ সংকেত সম্পর্কে জানুন
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ ও মঙ্গা কবলিত দেশ। প্রায়ই আমাদের বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের দরুন প্রায়ই সময় জনজীবনে নেমে আসে ভয়াবহ আতঙ্ক ও বিপদ। তাই, এমন আতঙ্ক থেকে কিছুটা নিস্তার পেতে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের সচেতনতা অতীব জরুরি। আজকের এই কনটেন্টটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কবলিত উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের সচেতনতার জন্য বিপদ সংকেত সম্পর্কে ধারণা পেতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশা করি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আবহাওয়াবিদগণ বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছাস সংক্রান্ত পূর্বাভাস সম্পর্কে অগ্রিম সতর্কতা হিসেবে ১ নম্বর হতে ১১ নম্বর পর্যায়ক্রমে সংকেত জারি করেন যা বিভিন্ন গনমাধ্যমে, ইন্টারনেটে, টিভি স্ক্রিনে ও রেডিওতে সতর্কতা বার্তা হিসেবে প্রচার করা হয়। চলুন আমরা বিস্তারিত জেনে নেই, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কি কি বিপদ সংকেত জারি করা হয় এবং কি সাংকেতিক চিহ্ন কখন প্রদান করা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে-
১ নম্বর সংকেত হচ্ছে, দূরবর্তী সতর্ক সংকেত।
২ নম্বর সংকেত হচ্ছে, দূরবর্তি হুঁশিয়ারি সংকেত।
৩ নম্বর সংকেত হচ্ছে, স্থানীয় সতর্ক সংকেত।
৪ নম্বর সংকেত হচ্ছে, স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত।
৫ নম্বর সংকেত হচ্ছে, বিপদ সংকেত।
৬ নম্বর সংকেত হচ্ছে, বিপদ সংকেত।
৭ নম্বর সংকেত হচ্ছে, বিপদ সংকেত।
৮ নম্বর সংকেত হচ্ছে, মহাবিপদ সংকেত।
৯ নম্বর সংকেত হচ্ছে, মহাবিপদ সংকেত।
১০ নম্বর সংকেত হচ্ছে, মহাবিপদ সংকেত।
১১ নম্বর সংকেত হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
আরও পড়ুনঃ ''ইন্টারভ্যাল'' কি ? তা জানুন!!!
চলুন জেনে নেয়া যাক, বিভিন্ন সংকেতের অর্থসহ বিস্তারিত-
১ নম্বর দূরবর্তী বিপদ সংকেত
জাহাজ অথবা ট্রলার ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হলে। সমুদ্রে একটি নির্দিষ্ট দূরবর্তী এলাকা রয়েছে যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিঃমিঃ যা ঝড়ো হাওয়ায় পরিণত হতে পারে।
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত
দূরবর্তী গভীর সাগরে এমন একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে যার বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ হতে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনি ঝড়ে কবলিত হবে না, কিন্তু বন্দর হতে ছেড়ে যাওয়া জাহাজ বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত
বন্দরের নোঙ্গর করা জাহাজগুলোর ঝড়ে কবলিত হওয়ার আশঙ্খা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্খা রয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ হতে ৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত
ইতোমধ্যে বন্দর ঘূর্ণিঝড়ে কবলিত। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১ হতে ৬১ কিলোমিটার হতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চুড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখন হয় নাই।
৫ নম্বর বিপদ সংকেত
ইতোমধ্য বন্দর তিব্র সামদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়েছে। ঝড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
৬ নম্বর বিপদ সংকেত
জাহাজ বন্দর ছোট অথবা মাঝারি দরণের তীব্র সামদ্রিক ঝড়ের কবলে পতিত। ঝড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
৭ নম্বর বিপদ সংকেত
জাহাজ বন্দর ছোট অথবা মাঝারি দরণের তীব্র সামদ্রিক ঝড়ের কবলে পতিত। ঝড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিঃমিঃ। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
বন্দর প্রচণ্ড ও তীব্র সামদ্রিক ঝড়ের কবলে পতিত হয়। ঝড়ো বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিঃমিঃ বা তার বেশিও হতে পারে। তীব্র গতিসম্পন্ন ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
বন্দর সর্বোচ্চ তীব্র গতিসম্পন্ন ঝড়ে পতিত হয়। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার বা এর চাইতে বেশি হতে পারে। প্রচন্ড গতির ঝড়টি বন্দরকে বাম দিক থেকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
বন্দর সর্বোচ্চ তীব্র গতিসম্পন্ন বিক্ষুব্ধ ঝড়ে পতিত হয়। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশিও হতে পারে। প্রচন্ড গতি সম্পন্ন ঝড়টি বন্দরের ওপর বা কাছে দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।
১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত
ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার কারণে বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে এবং স্থানীয় কর্মকর্তাগন আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ মনে করলে এমন নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই কনটেন্ট এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এর পূর্বাভাস হিসেবে বিপদ সংকেত সম্পর্কে আমরা আজকের এই কন্টেন্টের মাধ্যমে কিছুটা হলেও ধারণা পেলাম।
ধন্যবাদ এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য।