সদকাতুল ফিতর
পবিত্র মাহে রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মধ্য দিয়ে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিচ্ছে। মুমিনদের অন্তর কাঁদছে। পবিত্র রমজান থেকে আমরা ইসলামিক জীবন শিক্ষা গ্রহণ করছি। সিয়াম সাধনার পর আমরা শিখেছি সমবেদনা ও সহমর্মিতা। নবিজি হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন-পবিত্র রমজান হলো সমবেদনা ও সহমর্মিতার মাস (বায়হাকি)। তাই নিজেদের মধ্যে তৈরি হয় সহমর্মিতা।
রমজান মাসের দরুন ভিত্তবানরা গরিবের দুঃখ অনুভব করে। ইসলামে ধনীর পক্ষ থেকে গরিবের জন্য সদকাতুল ফিতর নির্ধারিত করা আছে। সদকাতুল ফিতর ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত যার দরুন গরিবের মুখে একটু হাসি ফুটায় । পবিত্র রমজান শেষে ঈদুল ফিতরের আগে এ ইবাদত পালন করতে হয়। সদকাতুল ফিতর হলো রোজার ক্ষতি পূরণ। সদকাতুল ফিতরের কারণে ধনী-গরিবের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি হয়। ধনীদের মতো গরিবরাও আনন্দের সাথে উথজাপন পরতে পারে। ভালো আহার পেতে পারে। এক্ষেত্রে সমাজের অসহায় মানুষগুলোর মনে ঈদের আনন্দ বয়ে যায়, অন্তরে শান্তি অনুভব হয়, মুখে হাসি ফোটে। নবিজি (সা.) বলেছেন-সদকাতুল ফিতর আদায় করার আগ পর্যন্ত রমজানের রোজা আসমান জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থেকে যায়।
ইসলামের বিধান হলো-ঈদের দিন সুবহে সাদিকের সময় যে ব্যক্তির কাছে কমপক্ষে সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সমমূল্য পরিমাণ সম্পদ থাকবে তার ওপর সদকাতুল ফিতর আবশ্যক বা ওয়াজিব।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ঘোষিত এবারের নির্ধারিত ফিতরার পরিমাণ হচ্ছে-জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬৪০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা। ইসলামে নির্দেশিত সাদকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো এক সা’ খাদ্যদ্রব্য, এক সা’ খেজুর, এক সা’ যব বা এক সা’ কিশমিশ। এক সা’ সমপরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন কেজি।
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) যখন আমাদের মধ্যে ছিলেন তখন আমরা ছোট-বড়, মুক্ত ক্রীতদাস সবার পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা’ খাদ্য অর্থাৎ এক সা’ পনির বা এক সা’ যব বা এক সা’ খেজুর অথবা এক সা’ কিশমিশ। (মুসলিম) উত্তম হলো- ঈদের দিন সকালে ঈদের মাঠে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করা।
প্রিয় পাঠক, আপনার পক্ষ থেকে ও আপনার নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকেও সদকাতুল ফিতর আদায় করা আবশ্যক। আপনার ওপর যদি সদকাতুল ফিতর আবশ্যক নাও হয় তবুও আপনি সদকাতুল ফিতর আদায় করতে পারবেন-অর্থাৎ সওয়াব অর্জন করতে পারবেন। সদকাতুল ফিতর অসহায় দরিদ্রের অধিকার। কোনো মসজিদ বা সাধারণ মাদরাসায় দান না করে গরিবের অধিকার গরিবদের বুঝিয়ে দিন। ঈদের দিন খুশির দিন। ঈদের আনন্দ হোক ধনী-গরিবের সবার। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে সদকাতুল ফিতর আদায় করার তওফিক দান করুন। আমিন।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ইসল্লামিক জীবনে সদকাতুল ফিতর এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিশদ ধারণ পেলাম। আজকের এই আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
আলোকবর্ষ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুণ। প্রীতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়।
comment url